বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন
মোঃ নুরুন্নবী- পাবনা জেলা প্রতিনিধিঃ
পাবনা শহরে অভিনব কায়দায় আলোচিত দস্যুতা ঘটনার রহস্য উৎঘাটন এবং ছিনতাইকারী চক্রের তিনজন সদস্যসহ খোয়া যাওয়া সকল স্বর্ণ ও ৩১,০০০(এক ত্রিশ হাজার)টাকা সহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার ১০ই জানুয়ারি মোঃ জহির ডাক্তার এর ভাড়া বাসায় বিকাল ০৫.০০ ঘটিকার সময় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ পরিচয় প্রদান করে ২ জন ছেলে একটা গিফট বক্স নিয়ে যায়।
ডাক্তারের স্ত্রীর সন্দেহ হলে তিনি তাদের বাসার ভিতরে ঢুকতে না দিয়ে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে বাসায় আসতে বললে আসামীগন তারাহুরা করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
ডাক্তারের স্ত্রী তার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারন করে এবং তাদের আটকের চেষ্টা করলে তারা দ্রুত দৌড়াইয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পারে।
পরের দিন বুধবার ১১ই জানুয়ারি দুপুর আনুমানিক ১২.০০ ঘটিকার সময় পাবনা শহরের বড় বাজার এলাকার জনৈক মোঃ আরিফ চৌধুরী এর বাসায় ৩ জন যুবক কোচিং সেন্টারের টিচার হিসাবে পরিচয় দিয়ে বাসায় প্রবেশ করে তার স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে একটি ধারালো চাকু দিয়ে ভয় দেখিয়ে আলমিরাতে থাকা নগদ ৭২ হাজার টাকা এবং ৪ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
উক্ত ঘটনার পরিপেক্ষিতে পাবনা সদর থানায় একটি দস্যুতার মামলার রজু হয়। উক্ত মামলার ভিত্তিতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বিভিন্ন এলাকার সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।
উক্ত আসামিরা হলোঃ ১। ঈশ্বরদী উপজেলার দীঘা গ্রামের মৃতঃ জমশের আলীর ছেলে মোঃ লিখন হাসান(২৪) সে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ২। রাজশাহী জেলার কাশিয়াডাঙ্গা থানার মিয়াপুর সুতাহাটি গ্রামের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল কাফির ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল বাকী @ অনিক(২২) সে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ৩। পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ভাদুড়িয়া ডাঙ্গী গ্রামের মোঃ হাকিম আলী মন্ডল এর ছেলে মোঃ আবুল বাশার(২১) সে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি জন্য ফোকাস কোচিং এ অধ্যায়নরত। ধৃত আসামীদের নিকট হতে ১. নগদ ৩১,০০০/-(একত্রিশ হাজার) টাকা। ২. ৪ (চার) ভরি স্বর্ণালংকার। ৩. আসামীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ৪ টি উদ্ধার করা হয়।
এখানে উল্লেখ্য যে- উপরোক্ত ঘটনাগুলো একই গ্রুপ অভিনব কায়দায় সংগঠন করেছে। ধৃত আসামীরা পাবনা শহরে অন্যান্য বাসায় ও একই কায়দায় দস্যুতা সংগঠন করা পরিকল্পনা করেছিল বলে জানা যায়। আসামীরা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
তারা অত্যান্ত বুদ্ধিমান এবং আইটি বিষয়ে অভিজ্ঞ। তারা হোয়াটস এ্যাপ বা অন্যান্য মিডিয়া ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতো। তারা যে বাসা গুলো টার্গেট করতো সে বাসা গুলো আগে থেকেই রেকি করে উক্ত বাসার মালিক ও পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতো এবং যেখানে যা পরিচয় দেওয়া দরকার সেখানে সেই পরিচয় দিতো।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- তারা ভারতীয় টিভি শো ক্রাইম পেট্রোল দেখে অভিনব কায়দায় অপরাধ করার কৌশল শিখেছে। প্রেস বিপিংয়ে এসব তথ্য জানান পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম। তিনি আরো যারা অন্য একটি মামলায় অস্ত্রসহ দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।